প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০২২ সাল হবে বাংলাদেশের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের একটি মাইলফলক বছর। জুন মাসে আমরা উদ্বোধন করতে যাচ্ছি বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু। অনেক ষড়যন্ত্রের জাল আর প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে আমরা এর নির্মাণ কাজ শেষ করতে যাচ্ছি। দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে সরাসরি রাজধানীসহ অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করবে এই সেতু। আশা করা হচ্ছে, এটি জিডিপিতে ১ দশমিক ২ শতাংশ হারে অবদান রাখবে।’ বর্তমান সরকারের তৃতীয় বর্ষপূতি উপলক্ষে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি এসব তথ্য দেন।
অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যোগ করেন, ‘এ বছরের শেষ নাগাদ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার অংশে মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি আমরা। ইতোমধ্যে এই অংশে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, মেট্রোরেল রাজধানী ঢাকার পরিবহন খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এছাড়া আগামী অক্টোবরে চট্টগ্রামে কর্ণফুলীর নদীর তলদেশ দিয়ে চালু হবে দেশের প্রথম টানেল।’
বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট০৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:১৪ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০২২ সাল হবে বাংলাদেশের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের একটি মাইলফলক বছর। জুন মাসে আমরা উদ্বোধন করতে যাচ্ছি বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু। অনেক ষড়যন্ত্রের জাল আর প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে আমরা এর নির্মাণ কাজ শেষ করতে যাচ্ছি। দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে সরাসরি রাজধানীসহ অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করবে এই সেতু। আশা করা হচ্ছে, এটি জিডিপিতে ১ দশমিক ২ শতাংশ হারে অবদান রাখবে।’ বর্তমান সরকারের তৃতীয় বর্ষপূতি উপলক্ষে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি এসব তথ্য দেন।
অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যোগ করেন, ‘এ বছরের শেষ নাগাদ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার অংশে মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি আমরা। ইতোমধ্যে এই অংশে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, মেট্রোরেল রাজধানী ঢাকার পরিবহন খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এছাড়া আগামী অক্টোবরে চট্টগ্রামে কর্ণফুলীর নদীর তলদেশ দিয়ে চালু হবে দেশের প্রথম টানেল।’
অন্যান্য বৃহৎ প্রকল্পের কাজও পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার আশা, ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের এপ্রিল নাগাদ চালু হবে।
বিদ্যুৎকে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য হিসেবে দেখছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের আগে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির নাজুক অবস্থার কথা মনে করিয়ে দেন তিনি, ‘তখন সাকুল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ছিল ৪২০০ মেগাওয়াট। বর্তমানে দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াটে। মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আমরা অক্ষরে অক্ষরে পূরণ করেছি। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পায়রাতে ইতোমধ্যে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। রামপাল, পায়রা, বাঁশখালী, মহেষখালী এবং মাতারবাড়িতে আরও মোট ৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট শক্তিসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে।’
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, ২০০৯ সালে জাতীয় গ্রিডে ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হতো, বর্তমানে যা ২ হাজার ৫২৫ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়িয়েছে। গ্যাসের অব্যাহত চাহিদা মেটাতে ২০১৮ থেকে তরলীকৃত গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে। ইংরেজি নববর্ষের শুরুতে সুখবর হিসেবে তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে যে গ্যাস হাইড্রেটের সন্ধান পাওয়া গেছে তার পরিমাণ ১৭ থেকে ১০৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।
শেখ হাসিনা মনে করেন, ‘জনগণের সরকার হিসেবে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। গত ১৩ বছরে আমরা আপনাদের জন্য কী কী করেছি তা আপনারাই মূল্যায়ন করবেন। তবে আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, যেসব ওয়াদা দিয়েছিলাম আমরা তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।’
২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইশতেহার ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল– দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মূল করে একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা।’
প্রধানমন্ত্রীর আশা, ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উচ্চ মধ্যম-আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের সমৃদ্ধশালী দেশ হবে।
শেখ হাসিনা জানান– গত বছর ২০২১-২০২৫ মেয়াদি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়েছে, যা বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। এ মেয়াদে ১ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শেষে দারিদ্র্যের হার ১৫ দশমিক ৬ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৭ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসবে। শেষ বছর ২০২৫ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ১০টি উদ্যোগ বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে, যা দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক হবে। রূপকল্প ২০৪১-এর কৌশলগত দলিল হিসেবে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ প্রণয়ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বিটিভি ওয়ার্ল্ড, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র, বিটিভির ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি সব টিভি চ্যানেল ও রেডিও স্টেশন থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে।