মহান স্বাধীনতার ৫১তম বার্ষিকীতে বীর শহীদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৬ মার্চ) ভোর ৫টা ৫৬ মিনিটে দিনের প্রথম প্রহরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান।
ঢাকার অদূরে সাভারে স্মৃতিসৌধে উপস্থিত হয়ে প্রথমে রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রপতির পরপরই জাতির সূর্যসন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেখানে এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায় এবং বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
পরে দলীয় প্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
এদিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইতে সই করেন রাষ্ট্রপতি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, তিন বাহিনীর প্রধান ও ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা এসময় স্মৃতিসৌধে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের শ্রদ্ধা জানানোর পর স্মৃতিসৌধ সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পক্ষে বীর শহীদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এদিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর বজ্রবাণীর পর ২৫ মার্চ রাতে অপারেশন সার্চলাইটের নামে ঢাকাকে মৃত্যুপুরী বানিয়ে ফেলে পাকিস্তানি বাহিনী। বাঙালির মুক্তির আন্দোলনের শ্বাসরোধ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, চলেছিল গণহত্যা। ওই আক্রমণ বাংলাদেশের প্রতিরোধ যুদ্ধের পথ তৈরি করে দেয়; ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করে দেন, বাংলাদেশ এখন স্বাধীন। পাকিস্তানিরা বন্দি করলেও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই শুরু হয় মুক্তির সংগ্রাম, মুজিবনগর সরকারের পরিচালনায় নয় মাসের সেই সশস্ত্র সংগ্রামের পথ ধরে বাঙালি জাতি পৌঁছায় মুক্তির বন্দরে, বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশের।
পরাধীনতার সেই শৃঙ্খল ভাঙার ৫১ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ শনিবার। গত দুই বছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সীমিত আয়োজনেই বাংলাদেশ উদযাপন করেছে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। সংক্রমণ কমে আসায় এবার জাতি স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করবে অনেকটা মুক্ত পরিবেশে।