চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব নির্বাচনে বিএনপিসহ বেশ কিছু বিরোধী দল অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন দলগুলোর শীর্ষ নেতারা।
নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা না থাকলেও কৌশলগত কারণে পুরো প্রক্রিয়ার ওপর নজর রাখার পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে ইস্যুটি ব্যবহার করার পক্ষে মত দিয়েছেন নেতারা।
রবিবার (৫ মার্চ) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানান, গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।এর মধ্যে এক বা দুটির নির্বাচন জুনের মধ্যে হতে পারে।
বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ঘোলাটে থাকবে। সে ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচন আয়োজনে সরকার ও ইসির যৌথ কোনও পরিকল্পনা থাকতে পারে।
দলের প্রভাবশালী দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটি নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি ও বিরোধী দলগুলো পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনে অংশ না নিলেও ইস্যুগুলোকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করবে। নির্বাচনের ফলাফল যা-ই হোক না কেন, রাজনৈতিকভাবে এর গুরুত্ব বিবেচনা করে ভূমিকা রাখবে বিএনপি।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। এই সরকারের অধীনে, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনও নির্বাচনে আমরা যাবো না। তারা ভোট চুরির প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। জনগণকে বাদ দিয়ে দেশ দখলের প্রক্রিয়া অংশমাত্র এসব নির্বাচন। এ ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।’
‘এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা ছাড়া আর কোনও পথ নেই’ বলে উল্লেখ করেন আমির খসরু।
বিরোধী দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনে কমিশনে নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে কেউ কেউ অংশ নিলেও বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো কোনোভাবেই অংশ নেবে না।
কোনও কোনও নেতা মন্তব্য করে বলেন, আবারও সরকার ও ইসি মিলে একটি ফাঁদ প্রস্তুত করছে।
জানতে চাইলে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘এই নির্বাচন একটি ফাঁদ। বিরোধী দলগুলো এই ফাঁদে পা দেবে না।’
সাইফুল হক আরও বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোনও সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। প্রথমত, নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা নেই। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে নিয়েছে। এসব নির্বাচনে অংশগ্রহণ মানেই সরকার, ইসিকে জাস্টিফিকেশন দেওয়া। তারা পুরো অ্যাটেনশন অন্যদিকে নিতে চায়। আমরা এখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি। ফলে ফোকাসটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে সরকার ও ইসি এই নির্বাচন করছে।’
তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ করে আসছে ধর্মভিত্তিক দল ইসলামী আন্দোলন। দলটির প্রচার ও দাওয়াহ (বিষয়ক সম্পাদক) আহমদ আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে অংশ নেবে আমাদের দল। আমরা ইউপিতে অংশ নিয়েছি। জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোয় আমরা অংশ নিয়েছি। সেদিক থেকে পাঁচ সিটি নির্বাচনেও অংশ নেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।’