1. admin@ultimatenewsbd.com : adminsr : Admin Admin
  2. afridhasan.ahb@gmail.com : Shah Imon : Shah Imon
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ

সঠিক সময়ে আমার মা সঠিক সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিলেন বলেই স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ultimatenewsbd.com
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০২১
  • ১৫৫

প্রত্যেকটা সংগ্রামে আমার মায়ের অনেক অবদান রয়েছে। একটা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু আমি সব সময় এটা বলি, আমার মা ছিলেন সব থেকে বড় গেরিলা। অসামান্য স্মরণশক্তি ছিল তার। বাংলাদেশের কয়েকটি বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত সঠিক সময়ে সেই সিদ্ধান্তগুলো সঠিক সময়ে আমার মা নিয়েছিলেন বলেই কিন্তু আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি। 

রবিবার (৮ আগস্ট) ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন’ ও ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২১ প্রদান’ অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুক্ত হন তিনি।   

শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি আমার মায়ের যে অবদান রয়ে গেছে দেশের রাজনীতিতে; শুধু তাই না, আমাদের বাংলাদেশের মানুষের যে আর্থিক দুরবস্থা, মানুষের কী চাহিদা, সে বিষয়গুলোও তিনি জানতেন এবং শিক্ষার প্রতি তার প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল। কারণ, আমার নানা শিক্ষিত ছিলেন। তিনি যশোরে চাকরি করতেন এবং তার খুব শখ ছিল যে তার দুই মেয়েকে তিনি লেখাপড়া শেখাবেন, বিএ পাস করাবেন। সে যুগে এ রকম চিন্তা করাটাও একটা দুঃসাহসিক ব্যাপার ছিল। 

পাকিস্তান রাষ্ট্র হওয়ার পর থেকেই কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে সব সময় রিপোর্ট দিতো। সে প্রসঙ্গ স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে রিপোর্টগুলো আমি প্রকাশ করেছি, সেখানে আমি কিন্তু একটি জিনিস খুঁজে দেখেছিলাম যে কোথাও আমার মায়ের কথা লেখা আছে কিনা। কিন্তু সেখানে তারা আমার মায়ের বিরুদ্ধে কিছুই লিখতে পারেননি। অথচ আমার মা রাজনীতিতে এত সক্রিয় ছিলেন। এই যে গোপনে দলের লোকজনের সঙ্গে দেখা করা।

সংকটকালে ছাত্রলীগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং তাদের দিকনির্দেশনা দেওয়ায় সময় বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে তিনি তার পোশাক পরিবর্তন করতেন। একটা বোরকা পরে, তারপরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, বিশেষ করে পলাশী অথবা আজিমপুর কলোনিতে আমাদের এক আত্মীয়ের বাসা; সেখানে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে দেখা করা, তাদের দিকনির্দেশনা দিয়ে আবার ফিরে এসে তিনি আমাদের নিয়ে বাসা ফিরতেন। এর বিস্তারিত আমার লেখায় আছে। আমি বেশি বলছি না। 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কিন্তু তার পাশে থেকে সব সময় প্রেরণা জুগিয়েছেন আমার মা। আমার মা কখনও সামনে আসেননি, কখনও কোনও মিডিয়ার সামনে যাননি। কখনও নিজের নামটাও ফলাতে চাননি। তিনি নীরবে পাশে থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রে আমার বাবাকে সহযোগিতা করে গেছেন, সমর্থন দিয়ে গেছেন। এটাই হচ্ছে সবথেকে একটা বড় ত্যাগ, যা তিনি স্বীকার করে গেছেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, আজকের দিনের যে প্রতিপাদ্য বিষয় ‘বঙ্গমাতা সংকটে-সংগ্রামে নির্ভীক সহযাত্রী’, এটা একান্তভাবেই যথার্থ। কারণ, তার নীরব সাক্ষী আমি। আমি বড় মেয়ে। আম্মার সঙ্গে আমার বয়সের তফাৎ কিন্তু খুব বেশি না। ১৬, ১৭ বা ১৮ বছর এ রকমই একটা ডিফারেন্স হবে। আমি আমার মায়ের সব থেকে কাছের এবং তার সুখ-দুঃখের সাথী, তার জীবনের কাহিনি আমি যতটা শুনেছি, আর কারও বোধহয় এতটা সময়-সুযোগ হয়নি।

বঙ্গমাতার ধৈর্য ও সাহস এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং বাস্তবায়ন করতে যথেষ্ট অবদান রেখেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আর পাঁচটা নারীর মতো বা সংসারের কর্ত্রীর মতো আমার মায়ের যদি নানা রকমের চাহিদা থাকতো; স্বামীর কাছে মানুষের অনেক আকাঙ্ক্ষা থাকে; অনেক কিছু পাওয়ার থাকে, কত মানুষ কত কিছুই তো চায়, শাড়ি চায়, বাড়ি চায়, গহনা চায়, এটা চায়, সেটা চায়; আমার মা কিন্তু সংসারের বা নিজের ব্যক্তিগত জীবনের বা আমাদের জন্য কখনও কোনও দিন কোনও ব্যাপারে আমার বাবার কাছে তার কোনও চাহিদা ছিল না। 

‘বরং সব সময় তিনি এটাই বলতেন, সংসার নিয়ে ভাবতে হবে না। আমাদের কথা চিন্তা করতে হবে না। তুমি দেশের কাজ করছো, দেশের কাজই করো। দেশের কথাই চিন্তা করো। তাই যখনই আমার বাবা কারাগারে গেছেন আমার মা কিন্তু সব সময় তাকে উৎসাহ দিয়েছেন। এমনকি কারাগারে গিয়ে সব সময় যে কথাগুলো বলতেন, একটা জিনিসের যে প্রেরণা দেওয়া, সেই প্রেরণা তিনি দিয়ে গেছেন সারাটা জীবন। আমি যতটুকু জেনেছি, যতটুকু লিখেছি, তাতে আমিও চেয়েছি আমার মায়ের কথাগুলো মানুষ জানুক’- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। 

তিনি বলেন, তার (বঙ্গমাতা) জন্মদিনটা আমরা পেলাম কীভাবে- সেটার পেছনে কিন্তু একটা ইতিহাস আছে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটা, এই বাড়িটা কিন্তু খুব ধীরে ধীরে, আস্তে আস্তে করা। এক চোটে করা সম্ভব হয়নি। সেখানে আব্বা আজকে জেলে, কালকে বাইরে। আমার মা-ই উদ্যোগ নিয়ে শুরু করেছিলেন। সোহরাওয়ার্দী সাহেব ঢাকায় এসে আমাদের বাসা দেখতে আসেন। তখন উনি যখন ফিরে যান, ফিরে যাওয়ার সময় উনি প্লেনে কয়েকটা সিঁড়ি উঠে যান, আবার নেমে আসেন। নেমে এসে আমার আব্বাকে বলেন, মুজিব তোমার বাড়িটা তুমি হেবা করে তোমার স্ত্রীর নামে লিখে দাও। পকেট থেকে কিছু টাকাও তিনি বের করে দেন। কারণ, হেবা করতে গেলে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ট্যাক্স দিতে হবে। সেই জন্য তিনি নিজে কিছু টাকাও দিয়ে গেলেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, আমার যতদূর মনে, পড়ে ৬২ সালের কথা। ৬১ কি ৬২ সালের দিকে, উনি টাকা দিয়ে গেলেন। হেবা করতে গেলে বিয়ের কাবিননামা দরকার। কাবিননামাটা ছিল আমার দাদার কাছে। কারণ, আমার মায়ের বাবা মারা গেছেন তিন বছরে, মা মারা গেছেন পাঁচ বছরে। তার দাদা মারা গেছেন সাত বছরে। তখন দাদার সম্পত্তি মা এবং খালার নামেই দিয়ে গিয়েছিলেন। সেই অর্পণ তিন বছর বয়সেই বিয়ে করে আমার দাদাকেই মোতোয়াল্লি করে দিয়ে যান সমস্ত সম্পত্তির, তাকেই গার্ডিয়ান করে দিয়ে যান। 

তিনি বলেন, সেই কাবিননামাটা আমার দাদার কাছেই রাখা ছিল। সেই সময় কাবিননামাটা প্রয়োজন হয়। আমার দাদা ওটা নিয়ে আসেন। আমি, আমার খালাতো বোন ছিল জেনি এবং রেহানা, আমাদের খুব আগ্রহ যে কী লেখা আছে পড়ে দেখবো। আমরা সেখান থেকেই কিন্তু মায়ের জন্ম তারিখটা পাই। সেই থেকে আমরা ঘরে ছোটখাটো করে মায়ের জন্মদিন পালন করতাম। আমাদের বাসায় জন্ম তারিখ বা কোনও কিছু বেশি উৎসব করে করা হতো না। শুধু রেহানা তার জন্মদিনে বন্ধুবান্ধবদের ডাকতো। তাছাড়া আমরা সবাই খুবই ঘরোয়াভাবে। সেভাবে কিন্তু মায়ের জন্ম তারিখটা আমরা পাই। পরে তো দাদা সেটা নিয়ে যান। আর একাত্তর সালে তো আমাদের বাড়ি টুঙ্গিপাড়া পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সেই বাড়িটা পুড়িয়ে দেয়। কাজেই সব পুড়েই যায়।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

© আল্টিমেট কমিউনিকেশন লিমিটেডের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান   ***চলছে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম***
Theme Customized BY LatestNews