বন্ধুত্ব, প্রেম, বিয়ে এবং প্রায় দুই বছরের সংসার জীবনের অবসান ঘটালেন শবনম ফারিয়া ও হারুন অর রশীদ অপু। শনিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এই বিচ্ছেদ নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন শবনম ফারিয়া। সেটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
মানুষের জীবন নদীর মতো। কখনও জোয়ার, কখনও ভাটা। কখনও বৃষ্টিতে পানি বেড়ে যায়, শীতকালে পানি শুকিয়ে যায়। আমাদের জীবনেও এমনটা হয়!
আমাদের জীবনে কিছু মানুষ আসে; কেউ কেউ স্থায়ী হয়, কেউ কেউ কিছু কারণে স্থায়িত্ব ধরে রাখতে পারে না!
আমার (শবনম ফারিয়া) মা সব সময় একটা কথা বলে, ‘আল্লাহর হুকুম ছাড়া একটা গাছের পাতাও নড়ে না, আমরা শুধু চেষ্টা করতে পারি!’
ঠিক সেভাবেই আমি আর অপু অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করেছি একসাথে থাকতে। কিন্তু বিষয়টা একটা পর্যায়ে খুব কঠিন হয়ে যায়!
‘মানুষ কী বলবে’ ভেবে নিজেদের ওপর একটু বেশিই টর্চার করে ফেলছিলাম আমরা।
‘জীবনটা অনেক ছোট, এতো কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকার কী দরকার?’ এইটা ভেবে আমরা এ বছরের শুরু থেকেই সিদ্ধান্তে আসি আমরা আর একসাথে থেকে কষ্টে থাকতে চাই না।
তাও বছর খানেক সময় নিয়েছি পরস্পরকে বুঝতে। ফাইনালি ‘আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যেই করেন’ ভেবে আমরা আমাদের প্রায় আড়াই বছরের বৈবাহিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে আবারও ৫ বছরের পুরনো বন্ধুত্বে ফিরে গিয়েছি।
বিবাহে বিচ্ছেদ হয়, কিন্তু ভালোবাসার বিচ্ছেদ নেই! বন্ধুত্বের বিচ্ছেদ নেই!
যতদিন বেঁচে আছি আমাদের ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব থাকবে!শুধুমাত্র বৈবাহিক বন্ধন থেকে আমাদের সম্পর্কের ইতি টেনে নিলাম। এ ঘটনা আমাদের জীবনের গতি হয়তো রোধ করবে, ছন্দপতন করবে, কিন্তু জীবন তো থেমে থাকবে না।
অপুর জন্যে আমার অনেক অনেক দোয়া, ভালোবাসা আর শুভ কামনা। আমরা যে সুখের জন্যে আলাদা হলাম, আমরা যেন সে সুখ খুঁজে পাই। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
দয়া করে ‘মিডিয়ার বিয়ে টেকে না’ ধরনের কথা বলে আমাদের জন্যে আমাদের সহকর্মীদের ছোট করবেন না।
আমরা সম্পূর্ণ ‘পারিবারিক কারণে’, পারিবারিকভাবে, পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ের মতো ইনস্টিটিউশন থেকে বের হয়ে এসেছি।
আমাদের কখনও ভালোবাসা কিংবা বিশ্বাসের অভাব ছিল না, হবেও না!
আর আমার প্রিয় সাংবাদিক ভাই/বোনদের উদ্দেশে একটাই অনুরোধ, দয়া করে একটু মানবিকতার সাথে বিষয়টা দেখবেন! প্লিজ! দুজন মানুষের বিবাহ বিচ্ছেদ মানে, দুইটা পরিবারের বিচ্ছেদ, অনেক স্মৃতির বিচ্ছেদ! অনেক ভালো সময়ের সাথে বিচ্ছেদ, এইটা কারও জন্য সুখকর অনুভূতি না। দয়া করে মুখরোচক অদ্ভুত সংবাদ প্রকাশ করে আমাদের আর বিব্রত করবেন না।
আমরা একে অন্যের ওপর সম্পূর্ণ সম্মান বজায় রাখতে চাই! ধন্যবাদ!