একাদশ সাজাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। তারপরও গোছানো খেলা উপহার দিয়েছে তার দল। কিন্তু ভিএআর ও শেষ মুহূর্তের পেনাল্টি জিততে দিল না তাদের। আর ঘরের মাঠে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের রুখে দিল ব্রাইটন।
শনিবার (২৮ নভেম্বর) খেলার শুরু থেকেই দুর্দান্ত কিছু আক্রমণ করেছিল লিভারপুল। জোতার করা গোলে এগিয়েও গিয়েছিল। কিন্তু মোহামেদ সালাহ ও সাদিও মানের দুটি গোল ভিএআর-এর সাহায্যে রেফারি বাতিল করে দেওয়ায় এবং শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে গোল হজম করার পর ১-১ গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে অল রেডসরা।
ঘরের মাঠে অবশ্য প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল ব্রাইটনই। ম্যাচের ২০ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। কনোলির দিকে ফ্লিক করে বল পাঠিয়েছিলেন বিসোমা। ওদিকে বলে পা ছোঁয়াতে গিয়ে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে নিজেদের বক্সে ফেলে দেন লিভারপুলের নেকো উইলিয়ামস। কিন্তু পেনাল্টি কাজে লাগাতে পারেননি ব্রাইটনের মিডফিল্ডার মুপে।
খেলার ৩৪তম মিনিটেই লিভারপুলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন সালাহ। ফিরমিনোর বাড়িয়ে দেওয়া বল দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে আলতো করে তুলে দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন মিশরীয় ফরোয়ার্ড। কিন্তু দীর্ঘ সময় ভিএআর-এর সাহায্য নিয়ে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। যদিও রিপ্লেতে সূক্ষ্ম ব্যবধান দেখা গেছে।
শুরুর দিকে ব্রাইটনকে পেনাল্টি উপহার দেওয়া তরুণ রাইট-ব্যাক নেকো উইলিয়ামসকে তুলে নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে জর্ডান হেন্ডারসনকে নামান ক্লপ। লিভারপুলের খেলাও গতি ফিরে পায়। ৬০তম মিনিটে আসে কাঙ্ক্ষিত গোলও। প্রতিপক্ষের ছোট ডি-বক্সের সামনে থাকা দিয়োগো জোতার দিকে বল পাঠিয়ে দেন সালাহ। আর ডিফেন্সের জটলা থেকেই বল দারুণ দক্ষতায় জালে জড়িয়ে দেন এই মৌসুমেই লিভারপুলে যোগ দেওয়া পর্তুগিজ স্ট্রাইকার।
পুরো তিন পয়েন্ট তুলে নিতে মরিয়া লিভারপুল কোচ ৬৪তম মিনিটে সালাহকে তুলে নিয়ে মানেকে নামান। কিন্তু এর মিনিট দশেক পরেই দলের ইনজুরিতে পড়াদের তালিকায় নাম লেখান জেমস মিলনার। চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ৮৩তম মিনিটে রবার্টসনের দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে বল পেয়ে ব্রাইটনের গোলরক্ষকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন মানে। কিন্তু এবারও ভিএআর-এর সাহায্যে অফসাইডের সিদ্ধান্ত দেন রেফারি।
ভিএআর-এর কারণে দুই গোল বাতিল হওয়ার ধাক্কা সামলানোর পরও নির্ধারিত সময় পর্যন্ত জেতার পথেই ছিল লিভারপুল। কিন্তু যোগ করা সময়ের শুরুতেই নিজেদের বক্সে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ব্রাইটনের ওয়েলবেকের পায়ে লাথি মেরে বসেন রবার্টসন। ভিএআর-এর সাহায্যে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। যদিও রিপ্লেতে দেখা গেছে লাথিটা ইচ্ছে করে মারেননি রবার্টসন।
এদিকে পেনাল্টি নিতে দেরি করানোর কারণে হলুদ কার্ড দেখেন লিভারপুলের গোলরক্ষক আলিসন। পরে পাস্কাল গ্রোর নেওয়া শটও ঠেকাতে ব্যর্থ হন তিনি। ব্রাইটনের জার্মান মিডফিল্ডার শট নেন ডান দিকে, আলিসন ঝাঁপ দেন ডানে। ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়তে হয় ক্লপের দলকে।
এই ড্রয়ের পরও অবশ্য ১০ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে লিভারপুল। তবে একদিন পর চেলসিকে যদি হারিয়ে দেয় টটেনহ্যাম, তাহলে শীর্ষস্থান হারাতে হবে ক্লপবাহিনীকে। দুই দলই লিভারপুলের চেয়ে এক ম্যাচ করে কম খেলেছে। টটেনহ্যাম ২০ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুইয়ে। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে চেলসি। ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার নিচের সারিতে হয়েছে ব্রাইটন।