গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কোনো সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেনি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাস ও দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির বিস্তার প্রতিরোধে কাজ করছে।
কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন লঙ্ঘনের মধ্য দিয়ে সেনা ছাউনিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠা করেছিল, যা ছিল সম্পূর্ণ বেআইনি।
বিএনপি যতবারই রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে ততবারই তাদের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী। তাদের হাত ধরেই এদেশের মাটিতে সন্ত্রাসের বিষবৃক্ষ মহীরুহে পরিণত হয়েছিল, যার সর্বশেষ সংস্করণ ছিল উগ্র-জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাস।
সেতুমন্ত্রী বলেন, রাজনীতির নীতিকে নির্বাসনে দিয়ে বিএনপি সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশের জনগণকে শাসন করতে চেয়েছিল, ১০ ট্রাক অস্ত্র এনে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের চারণভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গণতান্ত্রিক কাঠামোর সকল শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে বিরোধী মতকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষে এবং শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ মদদে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিসহ সার্বিক পরিস্থিতি পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। অথচ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আর্থ-সামাজিক সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি অভূতপূর্ব, যা বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্ব নেতারা ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলা বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সর্বদাই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। দলীয় পরিচয়ের আড়ালে কোনো অপরাধী কোনোদিন প্রশ্রয় পায়নি, পাবেও না। বরিশালের ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন এবং অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। বিএনপির আমলে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের দুঃসহ স্মৃতি জাতি এখনো ভোলেনি।
মহামারি করোনার মধ্যেও শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সুদক্ষ পরিচালনার কারণে বাংলাদেশ তুলনামূলক ভাল অবস্থানে রয়েছে। এমনকি পাকিস্তানি গণমাধ্যমেও শেখ হাসিনা সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করে সেদেশের বিশেষজ্ঞগণ তাদের শাসকগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন। এমন পরিস্থিতিতে কেবলমাত্র ‘সবকিছুতে পাকিস্তানি প্রেম’ ভাবাদর্শের মানুষই এমন তুলনা করতে পারেন।
তিনি শোকের মাস আগস্টে শোককে শক্তিতে পরিণত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার আহ্বান জানান।