নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস (সেজান জুসের) কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হত্যা মামলায় গ্রেফতার আট আসামি রিমান্ডে স্বীকার করেছেন তাদের অবহেলার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১৪ জুলাই) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম।
তিনি জানান, এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। জেলা প্রশাসনের সার্বিক নির্দেশনায় আমরা প্রাথমিকভাবে যাদের এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মনে করেছি তাদের গ্রেফতার করেছি। গ্রেফতারকৃত আটজনকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আমরা তাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আজ রিমান্ড শেষে আদালতে তোলার পর আদালত তাদের দুইজনের জামিন ও ছয় জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
এসপি জায়েদুল বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তাদের ভবন নির্মাণে অনিয়মসহ বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলেও তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। ঘটনাটি তাদের অবহেলায় ঘটেছে এটি তারা স্বীকার করেছেন।
এর আগে দুপুরে চার দিনের রিমান্ড শেষে আট আসামিকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে নেওয়া হয়। এ সময় আসামিপক্ষ সবার জামিনের আবেদন করলে আদালত দুজনকে জামিন দিয়েছেন এবং বাকি ৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত শনিবার (১০ জুলাই) গ্রেফতার ৮ জনকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে ৩০২, ৩২৬, ৩২৫, ৩২৩, ৩২৪, ৩০৭ ধারায় হত্যা এবং হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। আদালত প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার আটজন হলেন—সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসেম (৭০), তার ছেলে হাসীব বিন হাসেম ওরফে সজীব (৩৯), তারেক ইব্রাহীম (৩৫), তাওসীব ইব্রাহীম (৩৩), তানজীম ইব্রাহীম (২১), শাহান শান আজাদ (৪৩), মামুনুর রশিদ (৫৩) ও মো. সালাউদ্দিন (৩০)।
এদের মধ্যে জামিন পেয়েছেন আবুল হাসেমের ছেলে তাওসীব ইব্রাহীম ও তানজীম ইব্রাহীম। বাকিদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের চেষ্টায় ২০ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এ সময়ের মধ্যে ঝরে যায় ৫২টি প্রাণ। আহত হন অন্তত ৫০ জন।