জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ স্মার্টকার্ড (উন্নতমানের এনআইডি) দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে সামনে রেখে তাদের সম্মান জানাতেই এ উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি।
এজন্য স্মার্টকার্ডের ডিজাইনেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হতে পারে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্মার্টকার্ডটিতে থাকবে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’লেখা এবং মুক্তিযোদ্ধার লোগো। এক্ষেত্রে স্মার্টকার্ডের চিপের ঠিক নিচে বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখা থাকবে। আর লোগো থাকবে চিপের ওপরে। তবে স্মার্টকার্ডের এই ডিজাইন এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক কমিশন বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।
এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. নূরুজ্জামান তালুকদার জানিয়েছেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের একটু সম্মানিত করার চেষ্টা আমাদের। তাদের এতো অবদান, এটুকু আমরা করতেই পারি। যেহেতু এনআইডি কেন্দ্রিক বিভিন্ন সেবা দেওয়া হচ্ছে। তাই তারা যাতে স্মার্টকার্ড দেখিয়েই নিজেদের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেন, এটাই উদ্দেশ্য।
বিষয়টি নিয়ে শনিবার বৈঠক হবে। সেখানেই স্মার্টকার্ডের কোথায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শব্দটি লেখা থাকবে তা চূড়ান্ত হবে বলেও জানান তিনি। এজন্য মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকা নেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে। সেই তালিকার ভিত্তিতেই কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
তবে চূড়ান্ত কর্মপদ্ধতি ঠিক করা হবে পরবর্তীতে। যেহেতু মুক্তিযো্দ্ধাদের সংখ্যা বিরাট। তাই গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাদের সাড়া দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হতে পারে। পরবর্তীতে সেই তাদের আবেদন যাচাই করা হবে মন্ত্রণালয়ের তালিকা থেকে।
এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীর বলেন, আমরা চাচ্ছি তাদের স্মার্টকার্ডে বীর মুক্তিযোদ্ধ শব্দ দু’টি যোগ করতে। এক্ষেত্রে নামের আগে বা পরে নয়, একটি নির্দিষ্ট জায়গায় অর্থাৎ স্মার্টকার্ডের চিপের নিচ দিয়ে এই লেখাটা থাকবে। আমাদের সার্ভারে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি পৃথক জায়গা থাকবে। সেখানে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য থাকবে। বিষয়টি খুব শিগগিরই বিষয়টি বাস্তবায়নের দিকে যাবো আমরা।
তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখা স্মার্টকার্ডের তথ্য কেবল আমাদের সার্ভাবে থাকবে। অন্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সেটা দেখতে পারবেন না। সেটা স্মার্টকার্ডের চিপেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। এতে কেউ যাচাই করে নিতে চাইলে যাচাই করতে পারবেন।
ইসির এনআইডি সার্ভারে প্রায় ১১ কোটি ১৭ লাখ নাগরিকের তথ্য রয়েছে। এদের প্রায় সকলের লেমিনেটিং করা জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। আর স্মার্টকার্ড রয়েছে সাড়ে ছয় কোটি মানুষের।
২০০৭ সালে দেশে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুতের কাজ হাতে নেয় ইসি। পরবর্তীতে তার ভিত্তিতেই দেওয়া হয় এনআইডি। এরপর ২০১১ সালে এসে বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় স্মার্টকার্ড প্রকল্প হাতে নেয় নির্বাচন কমিশন। কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য এর আগে আলাদা কোনো স্মার্টকার্ড ডিজাইন করা হয়নি।