তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পদ্মা সেতু হওয়ায় সারা দেশের মানুষ যেখানে উল্লসিত, পুলকিত ও গর্বিত—সেখানে বিএনপির বক্তব্যে মনে হচ্ছে, তারা ঠিক সমপরিমাণ লজ্জিত এবং পদ্মা সেতু বিএনপির গলার কাঁটা হয়ে গেছে।
সোমবার (৪ জুলাই) সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকরা বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনে পাঁচ-দশ হাজারের বেশি লোক হয়নি’- এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।
তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতায় শুধু ৩ হাজার মানুষকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, সেখানে আর কারও যাওয়ার সুযোগ ছিল না এবং তাদের প্রত্যেককে করোনা টেস্ট করে সেখানে যেতে হয়েছে। আপনারা যারা সাংবাদিক, যারা অনুষ্ঠানটি কভার করেছেন, তাদেরও তাই করতে হয়েছে। আর এ উপলক্ষে যে জনসভা হয়েছে, সেখানে লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ হয়েছে। সেদিন যদি পদ্মা সেতু দেখার সুযোগ দেওয়া হতো, সেখানে কত মানুষ হতো সেটা আমি জানি না, তবে মনে হয় দেশের সব মানুষ সেখানে চলে যেতো।’
ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপির কিছু নেতার বক্তব্যে মনে হচ্ছে—তাদের সত্যিই মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। না হলে তারা এভাবে উদভ্রান্তের মতো কথা বলতো না, বিশেষ করে রিজভী আহমেদ। তিনি বেশ কিছু দিন অসুস্থ ছিলেন এবং আমার মনে হয়, পুরোপুরি সুস্থ হননি বলেই অসুস্থ মানুষের মতো কথা বলছেন। তার আরও একটু চিকিৎসা দরকার আছে বলে মনে হচ্ছে।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি আদালত ঘেরাও কর্মসূচি দেবে, এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আদালত ঘেরাওয়ের বক্তব্য সরাসরি আদালতের জন্য হুমকি স্বরূপ। আমি জানি না আদালত সেটিকে কীভাবে বিবেচনা করবেন, তবে এটি সরাসরি আদালতকে হুমকি দেওয়ার শামিল।’
এর আগে তথ্য অধিদফতর এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ প্রকাশিত ৬টি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী। তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মকবুল হোসেন, প্রধান তথ্য অফিসার শাহেনুর মিয়া, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক নিজামূল কবীর এ সময় বক্তব্য রাখেন।
মুজিববর্ষে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোর ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুভিত্তিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও কবিতা নিয়ে তথ্য অধিদফতর প্রকাশিত সংকলন ‘মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘মুজিব শতবর্ষ আবার আসবে না, দেড়শ’ বা দুইশ’ বর্ষ আসবে, তখন আমরা অনেকেই বেঁচে থাকবো না। আমরা ভাগ্যবান যে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন করতে পেরেছি। এই প্রকাশনার মাধ্যমে মুজিববর্ষের অনেক বিষয় সংরক্ষিত থাকবে।’
বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের গবেষণা প্রকল্পপ্রসূত অন্যতম সেরা পাঁচ গ্রন্থ—‘চলচ্চিত্র সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার’, ‘স্টেট, আইডেনটিটি অ্যান্ড ডায়াসপোরা ইন তানভীর মোকাম্মেলস ফিল্মস’, ‘প্রেক্ষাগৃহে ছবি দেখা: পাঁচ দশকের বিবর্তন’, ‘বিদেশি চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপস্থাপন’ ও ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলচ্চিত্র সমালোচনার স্বরূপ’ বইগুলো থেকে অনেক কিছু জানার আছে বলেন ড. হাছান মাহমুদ। তথ্য সচিব মো. মকবুল হোসেন বলেন, ‘তথ্যবহুল ও গবেষণালব্ধ এই গ্রন্থগুলো শুধু তথ্য মন্ত্রণালয়কেই নয়, দেশের তথ্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গনকেও সমৃদ্ধ করেছে।’ তিনি বইগুলো সবাইকে পড়ে দেখার আহ্বান জানান।