1. admin@ultimatenewsbd.com : adminsr : Admin Admin
  2. afridhasan.ahb@gmail.com : Shah Imon : Shah Imon
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:১৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে সিঙ্গাপুরের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা উপদেষ্টাদের মধ্যে দায়িত্ব পুনর্বণ্টন, দফতর পেলেন নতুন দুই জন শপথ নিলেন তিন উপদেষ্টা পাসপোর্টের তিন পরিচালক এখন ‘টাকার কুমির’ ৪০০ কোটি টাকার মালিক যে পিয়ন  গুজব প্রতিরোধে কঠোর হচ্ছে সরকার বিশ্বে অনেক বাজার আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে: প্রধানমন্ত্রী এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে পদ্মা ব্যাংক বাজার সিন্ডিকেটের সঙ্গে বিএনপির যোগসাজশ খতিয়ে দেখা হচ্ছে: কাদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন সৌদি যুবরাজ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে দেশে ফিরেছেন রাষ্ট্রপতি শ্রমবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: আইনমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারি করবে সরকার: আসিফ নজরুল মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন কাফরুল থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আকরামুল হক

পাসপোর্টের তিন পরিচালক এখন ‘টাকার কুমির’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ultimatenewsbd.com
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২০

পাসপোর্ট অফিসে টাকার কুমির হিসেবে পরিচিত তারা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তারা এতটাই প্রভাবশালী ছিলেন যে, অধিদফতরের মহাপরিচালক থেকে শুরু করে অন্যান্য সব কর্মকর্তাই তটস্থ থাকতেন। ঘুষ, দুর্নীতি, নিয়োগ এমনকি পদোন্নতি বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন।

আর এসব কারণে বিগত সরকারের সময়েই দুদক তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এমনকি অধিদফতর থেকে চাকরিচ্যুতির আবেদনও করা হয় মন্ত্রণালয়ে। এত কিছুর পরও তারা বহাল তবিয়তে আছেন। পাসপোর্টের আলোচিত এই তিন কর্মকর্তা এখন পরিচালক পদে আছেন। তারা হলেন- পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক (ডাটা অ্যান্ড পারসোনালাইজেশন সেন্টার) তৌফিকুল ইসলাম খান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক সাইদুল ইসলাম ও সিলেট বিভাগীয় পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

পাসপোর্ট অধিদফতরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বিগত সময়ে সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, ডিবির হারুন অর রশিদ, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজের ভাইসহ যত বিতর্কিত পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছে, এর সঙ্গে এই তিন কর্মকর্তা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। যা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই করা। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, পাসপোর্টের ঢাকা বিভাগীয় অফিসের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন যেন অপ্রতিরোধ্য ছিলেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আস্থাভাজন ও সাবেক আইজি বেনজির আহমেদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে নিয়ম নীতি, সিনিয়র জুনিয়র এমনকি কার সঙ্গে কী ব্যবহার করতে হবে, সব কিছুই তুচ্ছ ছিল তার কাছে। সরকারি এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এতটাই প্রভাবশালী যে মহাপরিচালকের সামনে তার কোনও আদেশ না মানার ঘোষণা দেন, অতিরিক্ত মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন। তার ভয়ে শুধু তার  অফিস নয়, প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তারা পর্যন্ত অতিষ্ঠ থাকতেন। অথচ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকে মামলা চলমান, ইতোমধ্যে চার্জশিটও হয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে অন্তত ১৫ ধরনের গুরুতর অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। অধিদফতর থেকে তাকে চাকরিচ্যুতির আবেদন করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা আবেদনে আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি অধিদফতরের ত্রৈমাসিক সভায় রীতিনীতি ভঙ্গ করে নিজে মাইক নিয়ে উচ্চস্বরে হৈচৈ শুরু করেন। মাল্টিপল অ্যাকটিভ পাসপোর্টে গোয়েন্দা প্রতিবেদন আবশ্যকতার বিষয়ে মহাপরিচালকের নির্দেশনার সমালোচনা করে বক্তব্য দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আমরা পরিচালকের কোনও আদেশ মানবো না। মন্ত্রণালয়ের আদেশ মানবো।’ এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অধিদফতর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়। কিন্তু তার জবাবে অধিদফতর সন্তুষ্ট না হয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে। বর্তমানে এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। গত ২৯ জুলাই তাকে ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস থেকে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে বদলি করা হয়।

আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকে মামলা চলমান। এছাড়া বেনজির আহমেদকে অবৈধ পাসপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলারও আসামি তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুনের বক্তব্য জানতে বিভিন্নভাবে যোগোযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এমনকি মোবাইলে মেসেজ পাঠালেও কোনও উত্তর দেননি।

পাসপোর্ট অধিদফতরের মামুনের ‘ক্লোজ’ হিসেবে পরিচিত তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি ২০০৪ সালে ইমিগ্রেশন এবং পাসপোর্ট অধিদফতরের সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। তার প্রথম পোস্টিং যশোর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। চাকরি জীবনে তিনি নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, সিলেট, কুমিল্লা, ঢাকার যাত্রাবাড়ী, ঢাকার হেড অফিস, খুলনা এবং বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ের পার্সোনালাইজেশন সেন্টারে পরিচালক হিসেবে কর্তরত। এর মধ্যে তিনি সহকারী পরিচালক ছিলেন ৭ বছর, উপ-পরিচালক ছিলেন ৮ বছর এবং উভয়পদে মোট ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ার ৩ মাসের মধ্যে পরিচালক পদে পদোন্নতি পান। এ সময় তিনি সর্বসাকুল্যে যথাক্রমে- ৫৫ হাজার, ৬৫ হাজার এবং বর্তমানে ৭৫ হাজার টাকা করে মাসে বেতন তুলছেন। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে তিনি ঢাকায় ৮টি ফ্ল্যাট, ৭টি প্লট ও বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হয়ে যান।

রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা পাসপোর্ট পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম খান সম্পর্কে খোঁজ- খবর নেয়। সে অনুযায়ী, পাসপোর্টের এই পরিচালকের নামে রয়েছে ঢাকার উত্তরায় ১৫০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট। যেটি কেনা হয় ১ কোটি ১০ লাখ টাকায়। ধানমন্ডিতে রয়েছে ২ হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট। কেনা হয় ২ কোটি টাকায়। ধানমন্ডির গ্রিন রোডে ১২৫০ বর্গফুটের ৩টি ফ্ল্যাট। একেকটির মূল্য ৮০ লাখ টাকা। লালমাটিয়ায় ১৩০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, মূল্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। ইন্দিরা রোডে একটি ফ্ল্যাট কেনেন ৬৫ লাখ টাকায়। ঘনিষ্ঠ বন্ধুর নামে বুকিং এবং অবশিষ্ট মূল্য পরিশোধ করেন। শান্তিনগরে ফ্ল্যাট, যেটি কেনা হয় ১ কোটি ২৬ লাখ টাকায়। এটির মূল্য তৌফিক তার ভাইয়ের নামে পরিশোধ দেখান। রাজধানীর নীলক্ষেতে আছে ২টি দোকান। একত্রে কেনা হয় ২ কোটি ২০ লাখ টাকায়। বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর রয়েছে ৬৪ লাখ টাকার।

যখন যেখানে ইচ্ছা প্লট কিনেছেন তিনি। এর মধ্যে মিরপুর রূপনগর (সম্প্রসারিত) প্রকল্পে ২ কাঠার প্লট কেনেন ১ কোটি ১০ লাখ টাকায়। উত্তরায় ৩ কাঠার প্লটটি কেনেন ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা দিয়ে। বর্তমানে বাজার দর ২ কোটি টাকা। রাজধানীর বনশ্রীতে রয়েছে সাড়ে ৩ কাঠার প্লট। শাশুড়ির নামে সেটি ৩ কোটি টাকা দিয়ে কেনেন। যার বর্তমান বাজার মূল্য সাড়ে ৩ কোটি টাকা। নিজ জেলা নেত্রকোনায় রয়েছে ১৪.৫৭ শতাংশের ওপর দোতলা বাড়ি, যার নিচে দোকান। এটি ২ কোটি ১০ লাখে কেনা। নেত্রকোনায় রয়েছে আরেকটি ছয় তলা বাড়ি, যা পৌনে ৪ শতাংশ জায়গার ওপর। কিনেছেন ২ কোটি টাকায়। নেত্রকোনায় নিজ গ্রামে এক দাগে কিনেছেন ৪ একর কৃষি জমি। যার আনুমানিক দাম ১ কোটি ৮০ লাখ। মোহনগঞ্জে কেনেন একসঙ্গে ১৩ একর ৮০ লাখ টাকায়।

মোট নগদ অর্থ রয়েছে ৪ কোটি ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের ব্যাংকে রয়েছে ৬৫ লাখ টাকা। স্বর্ণালঙ্কার আছে ৪৫ ভরি। তখনকার সময়ে যার বাজার মূল্য ছিল প্রায় ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পারিবারিক ব্যবহারের জন্য কিনেছেন ২টি গাড়ি। যার মধ্যে একটি ফিল্ডার, অন্যটি নোয়া। মূল্য ২২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। নগদ রয়েছে ৩ হাজার মার্কিন ডলার, ৭০০ সিঙ্গাপুরী ডলার, ইউরো রয়েছে ৯ হাজার। কোথায় কোন উপলক্ষে কত খরচ করেছেন তারও উল্লেখ রয়েছে। তার বিরুদ্ধেও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা চলমান রয়েছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

© আল্টিমেট কমিউনিকেশন লিমিটেডের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান   ***চলছে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম***
Theme Customized BY LatestNews