সিলেটের সাবেক কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) পার্থ গোপাল বণিককে জামিন দেওয়ার ঘটনায় ভুল স্বীকার করে হাইকোর্টের কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন। তবে এবিষয়ে আগামী ২৬ আগস্ট বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
পার্থ গোপাল বনিককে নিম্ন আদালতের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের করা আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ২৮ জুন এক আদেশে ওই বিচারকের কাছে জামিন বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা চান। পার্থ গোপাল বনিককে জামিন দেওয়ার সময় হাইকোর্টের আগের আদেশ বিবেচনা করা হয়েছে কীনা সেবিষয়ে বিশেষ জজ আদালতকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। এই আদেশের পর গত ১৯ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করেন বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন।
বিচারকের লিখিত ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, মামলাটি ছয়মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে ২০২০ সালের ২ নভেম্বর হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ পাননি। তবে ২০২১ সালের ১৭ জুন আসামির জামিন আবেদনের শুনানিকালে বিজ্ঞ আইনজীবী ওই আদেশের কপি দাখিল করে বলেন, হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া মেয়াদ এরইমধ্যে অতিবাহিত হয়েছে। ব্যাখ্যায় আরো বলা হয়, মামলাটির বিচার এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হাইকোর্ট গত ২৫ জানুয়ারি যে আদেশ দিয়েছেন তার কপি গত ১০ মার্চ পাওয়া গেছে। এই আদেশে উল্লিখিত সময়সীমার মেয়াদ এখনো বহাল রয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ প্রতিপালনে সদা সচেষ্ট রয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন ওই বিচারক।
এর আগে হাইকোর্টে দু’বার পার্থ গোপাল বণিকের আবেদন খারিজ হয়। ওই সময়ে হাইকোর্ট পৃথক আদেশে প্রথমে ৬ মাসের মধ্যে ও পরে একবছরের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের পরও নির্ধারিত সময়ে মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। এ অবস্থায় গত ১৭ জুন পার্থ গোপাল বনিককে ১৫ জুলাই পর্যন্ত জামিন দেয় ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালত। পরদিন শুক্রবার কারাগার থেকে মুক্তি পান ওই কারা কর্মকর্তা। এ নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রেক্ষাপটে ওই কারা কর্মকর্তার জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করে দুদক। এ আবেদনের ওপর গত ২৮ জুন হাইকোর্টে শুনানি হয়। আদালত দুদকের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন ও বিশেষ জজ আদালতের বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে আদেশ দেন।
রাজধানীর ভূতের গলির বাসা থেকে নগদ ৮০ লাখ টাকাসহ পার্থ গোপাল বণিককে ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়। ওই টাকা উদ্ধারের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে মামলা করে। তদন্ত শেষে গতবছর ২৪ আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। মামলাটি ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন। ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে মামলাটি।