নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এ কে অক্সিজেন লিমিটেড নামে একটি অক্সিজেন উৎপাদনকারী কারখানায় অভিযান চালিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট৷ এ সময় কারখানার শ্রমিকদের মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে থাকা আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে৷ বিক্ষুব্দ শ্রমিকরা মারধরের প্রতিবাদে কর্মবিরতি দিয়ে উৎপাদন কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভও করেন৷
শনিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে৷ উপজেলার বরপা এলাকায় অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটিতে পরিচালিত ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম৷
এ কে অক্সিজেন লিমিটেড কারখানার একাধিক শ্রমিক জানান, এসিল্যান্ড আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালতের একটি দল দুপুরে কারখানায় অভিযান শুরু করেন। সরকারি বিধিনিষেধ চলাকালীন অক্সিজেন উৎপাদনকারী কারখানাটি বন্ধ রাখার কোনো নির্দেশনা না থাকার কথা ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানো হয়৷ শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের মধ্যে একজনকে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতেই মারধর করেন সাথে থাকা আনসার সদস্যরা৷ এতে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে৷ এই ঘটনায় আহত শ্রমিক নজরুল ইসলামকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে৷
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় অন্য শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে প্রতিষ্ঠানের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন৷ প্রায় ছয় ঘন্টা কারখানাটিতে অক্সিজেন উৎপাদন বন্ধ থাকে৷ পরে জেলা প্রশাসন ও কারখানার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে৷ শ্রমিকরা পুনরায় অক্সিজেন উৎপাদন কাজে যোগ দেন৷
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলার এসিল্যান্ড আতিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি বিধিনিষেধ চলাকালীন কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে স্থানীয় লোকের মাধ্যমে খবর পেয়ে সেখানে অভিযানে যান তিনি৷ পরে সেখানে গিয়ে অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কারখানা জানতে পেরে সেখান থেকে চলে আসেন বলে দাবি করেন৷ এ সময় কোনো শ্রমিককে মারধর করার বিষয়টি অস্বীকার করেন আতিকুল ইসলাম৷
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই এসিল্যান্ড বিভিন্ন কারখানায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছেন। এটা উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত কাজের অংশ। তবে এসিল্যান্ড সেখানে গিয়ে অক্সিজেন উৎপাদনের কথা জানতে পেরে চলে আসেন।
আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, এ ব্যাপারে শুনেছি৷ যদি তদন্তে এ রকম কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেবো৷
এ বিষয়ে নাগরিক সমাজের নেতারা জানান, একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করতেই পারেন। তবে, অভিযান পরিচালনার পূর্বে প্রয়োজনীয় খোঁজ খবর নেয়া উচিৎ। কোন বিষয়ে পরিপূর্ণ রূপে খোঁজ খবর না নিয়ে হুট করে যেখানে সেখানে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মতো বিজ্ঞ লোকের অভিযান পরিচালনা করতে যাওয়ার উদ্যোগ সত্যিই অপ্রত্যাশিত।