নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় রেল স্টেশন এলাকায় মাদক বিক্রি ও ক্লাবের দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মাঝে পরে রাজমিস্ত্রী রুবেল হত্যা মামলায় আরো চার জনকে গ্রেফতার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। সোমবার (৫ জুলাই) রাতে শহরের কলেজ রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো ফতুল্লা থানার ইসদাইর নতুন রোড বস্তির শরিফ ওরফ ছকমলের ছেলে জুয়েল (২০), একই বস্তির হেলিম ওরফে জালালের ছেলে সাগর ওরফে দাঁত ভাঙ্গা সাগর (২০), ইসদাইর রেললাইন বস্তির মাসু বেগমের ভাড়াটিয়া মোঃ হারুনুর রশিদের ছেলে মোঃ শাকিল(২১) ও কলেজ রোডের আলমের পুত্র মাঈনুল ওরফে আলাউদ্দিন ওরফে ভুতু (২০)। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জুয়েল ও সাগর ওরফে দাঁত ভাঙ্গা সাগর হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী এবং গ্রেফতারকৃত অপর দুইজন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অন্যতম সন্দেহ ভাজন আসামী।
এর আগে পুলিশ এই একই মামলায় এজাহারনামীয় সাতজন আসামী সম্রাট, সেলিম,আলী, রাকিব ওরফে টাইগার, শিমুল, বিজয়, শরীফ এবং সন্দেহভাজন তিনজন সহ মোট দশ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শরীফ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সোমবার আদালতে স্বীকারোক্তি জবানবন্দি প্রদান করে।
এ নিয়ে রুবেল হত্যা মামলায় এজাহারনামীয় নয়জন ও সন্দেহভাজন পাচঁ জন সহ মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও হাসপাতালে আহতদের নিয়ে আসা ব্যক্তিদের মাধ্যমে জানা যায়, চাষাঢ়ায় রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকাতে মাদকের একটি স্পট পরিচালনা করতো মানিক ও শামীম গ্রুপ। দীর্ঘদিন ধরেই তারা এই স্পট নিয়ন্ত্রণ করতো। সম্প্রতি স্পটটিতে ভাগ বসাতে শুরু করে ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকার জুয়েল ও সোহাগ গ্রুপ। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কয়েকদিনে ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ২৮ জুন সন্ধ্যায় জুয়েল, জামান ও সোহাগ গ্রুপের ২০ থেকে ২৫ জন যুবক ইসদাইরের মাদক স্পটে এসে মানিক ও শামীম গ্রুপের সদস্যদের মারধর করে। মারধরের এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মাঝে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরে রাত ৯টায় আবারও জুয়েল, জামান ও সোহাগ গ্রুপ অস্ত্র সস্ত্র হামলা চালায়। এসময় আগে থেকে প্রস্তুত দেশীয় অস্ত্র প্রস্তুত রেখে পাল্টা হামলা চালায় মানিক ও শামীম গ্রুপ। আহত হয় জামান, জুয়েল সোহাগ সহ বেশ কয়েকজন। প্রায় আধাঘণ্টার সংঘর্ষে আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেই সংঘর্ষের মাঝে পড়ে রুবেল জখম হয়। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে ২৯ জুন ফতুল্লা মডেল থানায় ৩৪ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরো ২০/২৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।