দেশের করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে নভেম্বরে মাধ্যমিক (এসএসসি) এবং ডিসেম্বরে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তবে, পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে বিকল্পভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকালে ভার্চ্যুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গতবার সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের দিকে সংক্রমণ অনেকটা কমে গিয়েছিল। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ব্যাপক সংখ্যক জনগোষ্ঠীর মধ্যে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। গতবারের অভিজ্ঞতায় ধারনা করা হচ্ছে নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে সংক্রমণ কমতে পারে। ‘পরিস্থিতি অনুকূল হলে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। আর যদি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে পূর্ববর্তী জেএসসি-জেডিসি-এসএসসির ভিত্তিতে এবং অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে এসএসসি-এইচএসসির মূল্যায়ন করা হবে। ’
এসএসসি ও সমমান পর্যায়ের অ্যাসাইনমেন্ট আগামী ১৮ জুলাই থেকে শুরু হবে এবং ১২ সপ্তাহে মোট ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। তিনটি নৈর্ব্যক্তিক বিষয়ে (ছয়টি পত্রে) প্রতিটি পত্রে মোট ৫টি করে ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে।
এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া শুরু হবে আগামী ২৬ জুলাই থেকে এবং ১৫ সপ্তাহে মোট ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের (ছয়টি পত্রে) প্রতিটি পত্রে মোট ৫টি করে ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের আবশ্যিক ও চতুর্থ বিষয়ের কোনও অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এসএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষায় আবশ্যিক বিষয়গুলো (যেমন বাংলা, ইংরেজি, আইসিটি ও ধর্ম) অধ্যয়ন করেছে। বিষয়গুলো জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষায় মূল্যায়ন করা হয়েছে। এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় আবশ্যিক বিষয়গুলো যেমন বাংলা, ইংরেজি, গণিত, আইসিটি ও ধর্ম বিষয়গুলো অধ্যয়ন করেছে। এই বিষয়গুলো এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মূল্যায়ন করা হয়েছে। এসএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক বিষয়গুলো ইতোপূর্বে (জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষায়) শিক্ষা বোর্ডগুলো পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করেনি। সে কারণে এই বিষয়গুলো মূল্যায়ন করা আবশ্যক। এছাড়া আবশ্যিক বিষয়গুলোর নম্বর জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষায় সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এসএসসি ও সমমান পর্যায়ে নম্বর দেওয়া সম্ভব। একইভাবে এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক বিষয়গুলো ইতোপূর্বে (এসএসসি/সমমান পরীক্ষায়) শিক্ষা বোর্ডগুলো পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করেনি। সে কারণে এই বিষয়গুলো মূল্যায়ন করা আবশ্যক। এছাড়া আবশ্যিক বিষয়গুলোর নম্বর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ে নম্বর দেওয়া সম্ভব। এছাড়া উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রে গ্রুপভিত্তিক বিষয়গুলোর মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সে কারণে গ্রুপভিত্তিক বিষয়গুলোর মূল্যায়ন জরুরি।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি অনুকূল হলে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের ওপর পরীক্ষার সময় ও নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
মন্ত্রী আরো জানান ঈদুল আজহার পর পর এইচএসসির ফরম পূরণ অনলাইনে শুরু হবে। কোনো শিক্ষার্থীকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হবে না। অল্প বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে, তাই ফিও কম নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বোর্ড থেকে নির্দেশনা জারি করা হবে।