বিরল প্রজাতির প্রাণী তক্ষক ক্রয়-বিক্রয়কারী সংঘবদ্ধ চক্রের ৫ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা রমনা বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- সোয়েম আহম্মেদ সোহেল, মোঃ এনামুল হক, মোঃ হোসেন আলী, মোঃ মিজানুর রহমান ও মোঃ মামুন মিয়া।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল ২০২২) রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর ও গাজীপুরের পুবাইল ঘানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি রমনার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রন টিম।
ডিএমপির গোয়েন্দা রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক, পিপিএম এর নির্দেশনায় ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রন টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার নাজিয়া ইসলাম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
গ্রেফতারের সময় চক্রটির কাছ থেকে ১টি তক্ষক, নির্যাতনের কাজে ব্যবহৃত ১টি গামছা, ১টি প্লাস্টিকের লাঠি, নাইলন রশি, ১টি ওয়াকিটকি ও ১ টি এন্টেনাযুক্ত ল্যান্ডফোন উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (২০ এপ্রিল ২০২২) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার, বিপিএম (বার)।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, “গ্রেফতারকৃত সোয়েম আহম্মেদের গাজীপুরের পুবাইল কলেজ রেইলগেইটের বাধন সড়কে কথিত আন্তজার্তিক মানবাধিকার গোয়েন্দা সংবাদ সোসাইটি নামে একটি অফিস আছে। সোয়েম উক্ত অফিসে যুগ্ম পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। সোয়েম আহম্মেদ কথিত মানবাধিকার এর অফিস পরিচালনার আড়ালে উক্ত অফিসকে প্রতারণা আঁতুড়ঘর এবং একটি টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করতো”।
গ্রেফতারকৃতদের প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে গোয়েন্দা এই কর্মকর্তা বলেন, “গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোকের নিকট তক্ষক বিক্রি করার প্রলোভন দেখাতো। পরবর্তী সময়ে তাকে সোয়েম আহম্মেদের অফিসে নিয়ে আসতো। এরপর প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে তক্ষক ক্রয় করতে বাধ্য করতো। ভিকটিম তক্ষক ক্রয় করতে অস্বীকার করলে তারা শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করাসহ ভয়ভীতি দেখিয়ে তার নিকটে থাকা নগদ টাকা জোরপূর্বক নিয়ে নিতো এবং মোটা অংকের টাকা দাবি করতো। দাবিকৃত টাকা না দিলে তারা ভিকটিমদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে ধরিয়ে দিবে বলে ভয়-ভীতি দেখাতো”।
তিনি বলেন, “তক্ষক, সীমান্ত পিলার, ডলার, কয়েন এগুলোর কোন বাজার মূল্য নেই। কিন্তু প্রতারকরা সহজ সরল মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভন্ডামি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে”। তিনি সাধারণ মানুষকে এ ধরণের প্রলোভনে না পড়ার অনুরোধ করেন।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় প্রতারণাসহ একাধিক মামলা রয়েছে উল্লেখ করে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, “উত্তরা পশ্চিম থানায় তাদের নামে আরো একটি মামলা রুজু করা হয়েছে”।