জনগণ মনে করে এবং দলিল বলে জিয়াউর রহমানের মরদেহ নিয়ে বিএনপিই প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার (২৯ আগস্ট) রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য ‘জিয়ার লাশ নিয়ে কথা বলে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেয়া হচ্ছে’ এর জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জনগণ মনে করে এবং দলিল বলে আপনারাই (বিএনপি) প্রতারণাটা করেছেন। আমাদের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের মেয়ের জামাই রাঙ্গুনিয়ার তৎকালীন চেয়ারম্যান জহির এবং বর্তমান চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন দুজনই চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়াতে জিয়াউর রহমানের কথিত লাশ দাফনের প্রত্যক্ষদর্শী। তারাও বলেছেন যে, সেখানে কোনো লাশ দেখেননি।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করার পর এটি সমগ্র বাংলাদেশে প্রচার করা হয় এবং চট্টগ্রামে তৎকালীন স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা রেডিওতে বারবার প্রচার করতে থাকেন। চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের কর্মচারী নূরুল হক ২৬ মার্চ গোলাগুলির মধ্যে সারাদিন চট্টগ্রাম শহরে জীবনবাজি রেখে রিকশায় করে স্বাধীনতার ঘোষণা মাইকিং করেন। ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমানকে ধরে এনে ঘোষণা পাঠ করতে দেয়া হলে প্রথমে ভুল করেন ও পরে শুদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর নামে ঘোষণাটি পাঠ করেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার অপচেষ্টা চালানো হয় এবং স্বাধীনতার খলনায়কদেরকে নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়।’
‘যে অপশক্তি স্বাধীনতাবিরোধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় এবং স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে, সেই বিএনপি-জামাতচক্র এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না, এর একটি ফয়সালা হওয়া প্রয়োজন’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।
ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম প্রধান আলোচক ছিলেন। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের মাধ্যমে দেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠার কাজকে পূর্ণাঙ্গ করা সম্ভব হবে।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আব্দুল হাইয়ের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম প্রমুখ বক্তৃতা করেন।