বৃহস্পতিবার রাতে ‘হাই লেভেল প্যানেল-ক্লোজিং সেশন অফ দি ইউএনএফসিসিসি রেইস টু জিরো ডায়ালগ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় দেওয়া এক বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি।
এ বছর কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে বাংলাদেশ দুটি ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি বন্যার মুখোমুখি হয়েছে, যাতে ফসল ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে প্রকৃতিতে যে পরিবর্তন ঘটেছে ‘তার কারণেই এগুলো হয়েছে’।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা ইতোমধ্যে প্রাক-শিল্প যুগ থেকে প্রায় ১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়েছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের উপরে উঠতে দেওয়া যাবে না। এদিকে বর্তমান পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই শতকের শেষদিকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি হতে পারে। তাই এখনই পদক্ষেপ না নিলে পৃথিবী পুরোপুরি বসবাসের উপযোগী থাকবে না।
এই পরিস্থিতিতে সবাইকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “জীবন ও মূল্যবান সম্পদ বাঁচাতে বিশ্ব নেতৃত্বকে অবশ্যই কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করার জন্য সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
তিনি বলেন, “কালকে নয়, আজকেই ধরিত্রীকে বাঁচাতে পদক্ষেপ নেওয়ার সময়। প্যারিস চুক্তির কঠোর বাস্তবায়নই একমাত্র উপায় এবং ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টিকে মূল আলোচনায় আনতে হবে।”
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে অভিযোজন ও প্রশমণের কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য উন্নত দেশগুলো প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন
মার্কিন ডলার সহায়তার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তার বাস্তবায়নের আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া কম সুদে ঋণ প্রদান, ঋণ মওকুফ এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে সবার সুযোগ নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান রাখেন তিনি।
“কেবল সম্মিলিত বৈশ্বিক পদক্ষেপের মাধ্যমেই আমরা আসন্ন সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারি,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশের এ বছর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনেক আগেই এদেশের মানুষের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি অনুধাবন করেছিলেন। এই হুমকি কাটিয়ে উঠতে এবং মানুষের অধিকার রক্ষায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি।
দেশ ও দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন সরকার প্রধান।
বাংলাদেশকে দ্বিতীয় দফায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৪৮ দেশের প্ল্যাটফর্ম ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম-সিভিএফের চেয়ারপারসন নির্বাচিত করায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।