গীতিকবি, সুরস্রষ্টা ও কণ্ঠশিল্পীরা নানা অনিয়ম, অবহেলা আর প্রাপ্য সম্মান ও সম্মানী থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন প্রায় ৫০ বছর ধরে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে গীতিকবি, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীরা এবার এলেন এক ছাতার নিচে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম ঘটলো। গঠিত হলো ‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’।
শনিবার (১০ জুলাই) বেলা তিনটায় এই সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে। অন্তর্জালে আয়োজিত এই সম্মেলনে ঘোষণা করা হয় সংগঠনটির প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটি। কমিটি ঘোষণা করেন সিঙ্গার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক কুমার বিশ্বজিৎ।
সভাপতি রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, মহাসচিব (৩ জন) শহীদ মাহমুদ জঙ্গী, নকীব খান ও কুমার বিশ্বজিৎ, অর্থ ও দফতর সচিব আসিফ ইকবাল, তথ্যপ্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সচিব হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল, সাংস্কৃতিক সচিব বাপ্পা মজুমদার, প্রচার ও প্রকাশনা সচিব জুলফিকার রাসেল এবং নির্বাহী সদস্য মানাম আহমেদ, কবির বকুল, শওকত আলী ইমন ও জয় শাহরিয়ারকে নিয়ে সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর প্রথম কমিটি সাজানো হয়েছে ।
নবগঠিত কমিটির সভাপতি রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, ‘এই মুহূর্তটি আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান। কিছুদিন আগে সিঙ্গার্স অ্যাসোসিয়েশন করেছি। বিগত দিনের অভিজ্ঞতায় শিখেছি- এখন আমাদের এক হয়ে কাজ করার বিকল্প নেই। যে কোনও বিপদে ও সংকটে পরস্পরের পাশে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই। আমাদের আরও দুটি সংগঠন হয়েছে। তিনটি আলাদা সংগঠন হলেও একহয়ে এরমধ্যে অনেক কাজ করেছি আমরা। আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের কারণ সেই এক হয়ে কাজ করার বিষয়টি সাংগঠনিকভাবে তুলে ধরা।’
মিউজিক কমপোজার্স সোসাইটির সভাপতি নকীব খান বলেন, ‘সার্বিক সংগীতের মান উন্নয়ন, সম্মান ও সম্মানীর জন্য আমরা একসঙ্গে লড়াই করার প্রত্যয় নিয়েই এই প্ল্যাটফর্ম গঠন। এটা অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সংগঠন। সংগীতের সকল পক্ষকে আস্থায় নিয়ে কাজ করে যাওয়ার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিশ্চিত করার চেষ্টা করবো আমরা। আমাদের স্বপ্ন সংগীতের পাশাপাশি দেশের প্রয়োজনে জনগণের জন্যেও কাজ করার।’
সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর গঠন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে গীতিকবি সংঘের সভাপতি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী বলেন, ‘গত বছর এই সময়টাতেই আমাদের তিনটি সংগঠন সৃষ্টি হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করলাম নিজ নিজ দাবির মধ্যে কিছু অভিন্ন দাবি আছে। ১৭ দফা তৈরি করি। এরপর সবাই মিলে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করি। চিন্তা করলাম, কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে এক জায়গায় আসতে হবে আমাদের। আরও সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হবে গীতিকবি, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে। তাই তিনটি সংগঠন রেখেই- একটি ফেডারেল সংগঠন করার পরিকল্পনা করি সবাই। যেটার নাম হলো সংগীত ঐক্য, বাংলাদেশ।
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ও বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কথা বলেন সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর নেতৃবৃন্দ।