সরকারের খাজাঞ্চি খালি হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আমার আয়কর আইনজীবী বলেছেন, এখন থেকে নাকি অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (আয়কর) দিতে হবে। কেন দিতে হবে? কারণ, সরকারের খাজাঞ্চি খালি হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, তারা ঋণ নিচ্ছে সবখান থেকে। টাকা ছাপাচ্ছে, ব্যাংক থেকে টাকা চুরি করছে। রিজার্ভ থেকে টাকা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। কোন ক্ষেত্রে এই সরকারের সাফল্য? আমি বলব শুধু মুখেই।
বুধবার (১৫ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন রচিত ‘আমার রাজনীতির রোজনামচা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের মানুষ সরকারের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ ভালো করে খাবার কিনতে পারে না। দেশের শতকরা ৮০ শতাংশ মানুষ আমিষ খেতে পারে না। দেশের মানুষ এখন গরুর মাংস-খাসির মাংস খেতে পারে না। এমনকি মাছে পর্যন্ত হাত দিতে পারে না। দেশে তারা (আওয়ামী লীগ) গ্যাস, বিদ্যুৎসহ সব কিছুর দাম বাড়িয়ে চলেছে। তাদের তো আর এর বিল দিতে হয় না। জনগণের পকেট কেটে তারা (সরকার) এ বিল দেয়।
তিনি বলেন, দেশের সর্বোচ্চ যে আদালত, সেই নির্বাচনে গতকাল রাতে ব্যালট ছাপিয়ে সিল মেরেছিল আওয়ামী লীগ। সেটা বিএনপির আইনজীবীরা ধরে ফেলেছেন। এ কারণে সেখানে গোলযোগ হয়েছে। আমাদের যিনি নির্বাচিত হয়েছেন, তাকে তারা (আওয়ামী লীগ) আঘাত করেছে, আক্রমণ করেছে। তার নাম দিয়ে এক হাজার আইনজীবীর ওপর মামলা করেছে। আমরা এ কোন দেশে বাস করছি। আওয়ামী লীগের এই অপকর্মের কারণে তাদের একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। আগে জানতাম, তারা জাতীয় নির্বাচনে ভোট চুরি করে। এখন সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনেও তারা ভোট চুরি করছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগে দেশকে চরমভাবে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের মূল্যবোধ এবং আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার সব কিছুই তারা ভেঙে দিচ্ছে। দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা, ভিন্ন মত ধ্বংস করাই হলো আওয়ামী লীগের মূল নীতি। ক্ষমতায় থাকার জন্য তাদের যা যা করা দরকার তারা তা-ই করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে চুরি। তারা দেশের বিদ্যুৎ খাতে এমনভাবে চুরি করেছে যে, এখন সেখানে আর কিছু আছে বলে মনে হয় না। তারা আবার আইন করেছে যে, চুরির বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। সরকার ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করেছে, দুইশ ডলারের কয়লা চারশ ডলারে কিনবে। এর মাধ্যমে তারা বছরে প্রায় লাখ কোটি টাকা চুরি করতে সক্ষম হবে। এখন তারা আবার নতুন চুরির জায়গা তৈরি করছে পাতাল রেলের মাধ্যমে। তারা নাকি এই রেল করতে পূর্বাচলের রাস্তা খুঁড়বে। আমরা যারা ঢাকায় থাকি, প্রতি বছর দেখি বিনা প্রয়োজনে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করছে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী। েতে সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ড. খন্দকার মারুফ হোসেন।