সরকার ৫০ লাখ ডোজ টিকা নিয়ে গণকর্মসূচির নামে প্রতারণা করছে অভিযোগ করে দেশের ৭০-৮০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে তাগিদ দিয়েছে বিএনপি। প্রয়োজনে মেগা প্রজেক্ট স্লো করে টিকা ক্রয়ে সরকারকে পরামর্শ দেয় দলটি।
সোমবার (৫ জুলাই) দুপুরে বিএনপির করোনা টিকা সংগ্রহ ও বিতরণ পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক এবং দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ পরামর্শ দেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ৭০-৮০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হলে করোনাকে ১ নং জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। সেই সঙ্গে সরকার যে মেগা প্রজেক্ট করছে এগুলো প্রয়োজনে স্লো করে অন্য খাত থেকে টাকা নিয়ে বিশ্বের যে টিকার সোর্স রয়েছে সেখান থেকে টিকা সংগ্রহ করতে হবে। আর তা না পারলে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিগত এক সপ্তাহ যাবত কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর সংখ্যা ১০০-এর উপরে এবং শনাক্তের হার প্রায় ২৮ শতাংশে পৌঁছেছে। সরকার ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু এর পূর্বে সরকারের অব্যবস্থা, দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতার কারণে সরকারের লকডাউন তামাশায় পরিণত হয়েছিল। ভারতের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর বিএনপিসহ বিভিন্ন মহলের দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলেও তা কার্যকর করা হয়নি। ফলে বর্তমানে সীমান্ত জেলাসহ সমগ্র বাংলাদেশে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে বিএনপিসহ বিভিন্ন মহল সতর্ক করার পরও সরকার কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল, আইসিইউ, অক্সিজেন, ভেন্টিলেটরসহ চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারণ করেনি। সরকারি ১০০ হাসপাতালের ৫২টিতে এবং ৩৫টি জেলার সদর হাসপাতালে কোনো আইসিইউ নেই। হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলার অভাবে বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর খবর প্রতিদিন প্রকাশিত হচ্ছে। এ সকল সুবিধার দাবি করে বিএনপির পক্ষ থেকে ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদফতরে ও জেলা সিভিল সার্জনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার কোনো কর্ণপাত করেনি।
মোশাররফ হোসেন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন মহলের তাগিদ সত্ত্বেও সরকার করোনা পরীক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও করেনি। বরং সরকার করোনা পরীক্ষা নিয়ে নজিরবিহীন দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে দেশে সামগ্রিকভাবে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে জনসংখ্যার মাত্র ৩ শতাংশ মানুষ।