নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের নয়াগাঁও এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষে তিনটি শক্তিশালী বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা।
রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই অভিযান শেষ হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান সিটিসিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
এই অভিযান সমাপ্তি ঘোষণার পর তিনি জানিয়েছেন, এই আস্তানার এক জঙ্গির তথ্যের ভিত্তিতে তারা রোববার রাত ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুরে হাজিপাড়ায় একটি বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করছেন।
সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে মো. আসাদুজ্জামান জানান, অভিযানে তিনটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করেছেন সিটিসিসির সদস্যরা। বোমা তিনটি নিস্ক্রিয় করা হয়েছে। এছাড়া জঙ্গি আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছেন তারা।
জানা গেছে, সিটিটিসির সদস্যরা রোববার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে। তিনি সাংগঠনিকভাবে ডেভিড কিনারা ওরফে আকিন আল বাঙালি নামে পরিচিত। আড়াইহাজারের ওই এলাকার একটি মসজিদে মুয়াজ্জিনের দায়িত্বে ছিলেন। নিজের পরিচয় লুকিয়ে একটি এতিমখানাতেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার কাছ থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতেই বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়েছে। ওই বাড়ির একটি কক্ষে থাকেন আবদুল্লাহ আল মামুন।
আসাদুজ্জামান জানান, মামুনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার আরও একজন সহযোগীকে শনিবার গ্রেপ্তার করেছে সিটিসিসি।
তিনি বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে আমরা এখনই তার নাম প্রকাশ করছি না। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নারায়নগঞ্জের মদনপুরে অভিযান পরিচালনা করছি।’
রোববার সন্ধ্যার দিকে আড়াইহাজারের নয়াগাঁও এলাকায় ওই বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। এরপরই ঢাকা থেকে জঙ্গি দমনে বিশেষায়িত সোয়াট টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।
সিটিটিসির বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত উপ কমিশনার রহমত উল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছে, মামুনকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) তৈরি করতো। তার থাকার কক্ষে এ ধরনের বিস্ফোরকও রয়েছে। এরপরই পুলিশ বাড়িটি ঘিরে ফেলে।
গত মে মাসে নব্য জেএমবি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পাশে দূর নিয়ন্ত্রিত (রিমোট কন্ট্রোল) আইইডি রেখে যায়। সেটি দেখতে পেয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের বোমা ডিসপোজাল টিম তা নিষ্ক্রিয় করে।
পুলিশ কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, মামুনের বাড়িতে তৈরি বিস্ফোরকই পুলিশের স্থাপনার পাশে রাখা হয়েছিল। তবে সেটি সময়মতো বিস্ফোরিত না হওয়ায় হতাহত থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।